এইতো জীবন এইতো মাধুরী ২০১৫ (দোহা-ইকবাল-শ্যামলী)
সার্বিক বিষয়সমূহঃ
স্থানঃ সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন, সেগুনবাগিচা, ঢাকা
তারিখঃ শুক্রবার, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
সময়ঃ সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ টা
আয়োজকঃ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী
সহযোগিতায়ঃ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ
আবৃত্তি শিল্পীঃ
- এ কে এম সামছুদ্দোহা
- ইকবাল আহমেদ
- শ্যামলী সুলতানা
উপস্থাপনায়ঃ মজুমদার বিপ্লব
এ কে এম সামছুদ্দোহাঃ

আবৃত্তি সাংগঠনিক চর্চায় নিবেদিতপ্রাণ এক স্বাপ্নিক মানুষ এ কে এম সামছুদ্দোহা। জন্ম ঢাকার সেগুনবাগিচায়, ২০শে নভেম্বর ১৯৬৮ সালে। বাবা আব্দুল বারী ও মা ফিরোজা বেগম। পড়াশোনা করেছেন সেগুনবাগিচা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা সিটি কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। পেশাগত জীবনে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, মিরপুর হাউজিং এস্টেটে।
সামছুদ্দোহার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রবেশ ১৯৮৫ সালে ‘সময়’ নাট্যদলের মাধ্যমে। তিনি লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ বি২-এর অধীনে শাহবাগ গ্লোরিয়াস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি।
২০০৫ সালে স্রোত আবৃত্তি সংসদে সংযুক্তির মধ্য দিয়ে আবৃত্তির সাংঠানিক চর্চায় ব্রতী হন সামছুদ্দোহা। এ বছরই নবগঠিত সংগঠন ‘সংবৃতা আবৃত্তি চর্চা ও বিকাশ কেন্দ্রে’র প্রর প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি সংবৃতা’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
সামছুদ্দোহা সংবৃতা’র বিভিন্ন প্রযোজনায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি মঞ্চে নিয়মিতভাবে আবৃত্তি পরিবেশন করেছেন দীর্ঘদিন ধরে।
এ কে এম সামছুদ্দোহার আবৃত্তিকৃত কবিতাসমূহঃ
- অদ্ভুত আঁধার এক – জীবনানন্দ দাশ
- মাতৃভূমির জন্য – সৃজন সেন
- একুশের গান – আব্দুল লতিফ
- সন্ধ্যা ও প্রভাত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- হুলিয়া – নির্মলেন্দু গুণ
- হঠাৎ দেখা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- আমি বাংলায় গান গাই – প্রতুল মুখোপাধ্যায়
- তোমারই পদধ্বনি – শামসুর রাহমান
- বারবার বিডলারকে – আসাদ চৌধুরী
- ত্রাণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ইকবাল আহমেদঃ

ইকবাল আহমেদের জন্ম ১লা জুন, শরীয়তপুর জেলার গোঁসাইরহাট থানার কোদালপুর ইউনিয়নে। বাবার ব্যবসায়ের সুবাদে ছোটবেলাতেই ঢাকায় চলে আসেন তিনি। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্সসহ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা।
প্রায় পনের বছর ধরে ইকবাল আহমেদ একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন মুক্তধারা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রে। এ সংগঠনের বেশিরভাগ প্রযোজনায় তার উপস্থিতি উজ্জ্বলভাবে চোখে পড়ার মতো। সংগঠনের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিতভাবে আবৃত্তি পরিবেশন করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বেতার এবং টেলিভিশনেও আবৃত্তি করেছেন নিয়মিত। বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত নাট্যশিল্পী তিনি।
ইকবাল আহমেদের নেশা আবৃত্তি। স্বপ্ন দেখেন, একদিন পেশাও হয়ে উঠবে আবৃত্তি। আবৃত্তির প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ফুরোবার নয়।
ইকবাল আহমেদের আবৃত্তিকৃত কবিতাসমূহঃ
- মানুষ, এই শব্দটি আমাকে বড় আলোড়িত করে – তাসলিমা নাসরিন
- বাণী (লিপিকা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- কালো মেয়ের জন্যে পঙতিমালা – শামসুর রাহমান
- বাজে গল্প – সুকুমার রায়
- ষাট দশকের একটি সাধারণ গল্প – ফারুক মাহমুদ
- অন্ধকার – জীবনানন্দ দাশ
- আছর – শেখর বরণ
- বোধন – সুকান্ত ভট্টাচার্য
- টেরাকোটা – হাসান হাফিজ
- আগমনী – কাজী নজরুল ইসলাম
শ্যামলী সুলতানাঃ
শ্যামলী সুলতানার আবৃত্তির প্রতি অনুরাগ ছোটবেলা থেকেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আবৃত্তি সংগঠন স্বনন-এর সাথে যুক্ত হয়ে সাংগঠনিকভাবে আবৃত্তিচর্চা শুরু করেন। ২০০২-০৩ কার্যবর্ষে ‘স্বনন’, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি বহন করছে ‘ধন্য বিশ্বের বন্য বেশ’, ‘শঙ্খ তব গগনভারি বাজে’, ‘এসেছি ক্ষুদ্র অগ্নিকনা নিয়ে’, ‘রঙ যে ফুটে উঠে কত’ প্রভৃতি অনুষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে স্যামলী সুলতানা ‘স্বনন’, ঢাকা’র সাথে যুক্ত হয়েছেন ২০০৫ সালে। আজ অবধি তিনি এ সংগঠনের সক্রিয় কর্মী। অংশগহণ করেছেন স্বননের ‘কথা নিরবধি’, জোৎস্নার পঙতি’, ‘যুদ্ধ যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ’, ‘বর্ষা থেকে ফিরে এক পশলায়’ ইত্যাদি শিরোনামের অনুষ্ঠানে।
মঞ্চের পাশাপাশি টেলিভিশনেও নিয়মিত আবৃত্তি পরিবেশন করছেন শ্যামলী সুলতানা। টেলিভিশনে তার উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছেঃ চ্যানেল ওয়ান-এ নারী দিবসে প্রচারিত ‘তুমি কোন গগনের তারা’, এনটিভিতে স্বাধীনতা দিবসে প্রচারিত ‘বন্দিশিবির থেকে’। দু’টো অনুষ্ঠানই দর্শকমহলে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। এছাড়া টেলিভিশনে প্রচারিত তার অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ‘বজ্রে বাঁধি বাসা’ ‘বর্ণ মিছিল’, ‘কীর্তি তোমার বহমান’, ‘একুশের কবিতা’, ‘এই কথাটি মনে রেখো’ প্রভৃতি।
অডিও সিডিতেও নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছেন শ্যামলী। ‘মিলিত প্রাণের বাসনা’, ‘নিরঞ্জনা তোর বড় কষ্ট রে’ এবং ‘চেনা মুখ অচেনা মুখোশ’ তার উল্লেখযোগ্য অডিও এ্যালবাম।
প্রথমত আবৃত্তি, দ্বিতিয়ত আবৃত্তি, শেষ পর্যন্ত আবৃত্তিতেই নিজেকে সংযুক্ত রাখতে চান। সাংগঠনিকভাবে এবং কবিতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চান শ্যামলি সুলতানা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্যামলী বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
শ্যামলী সুলতানার আবৃত্তিকৃত কবিতাসমূহঃ
- দিও – পূর্ণেন্দু পত্রী
- আবার একা একা সেই ঘরের পাল্লাদুটোর মতো – শক্তি চট্টোপাধ্যায়
- হা’দের ঘরকন্যা – রিআ মাহমুদ
- বারাঙ্গনা – কাজী নজরুল ইসলাম
- দূরযাত্রা – আবুল হাসান
- আমি বীরাঙ্গনা বলছি – নীলিমা ইব্রাহিম (সম্পাদনা)
- হে সময় অশ্বারোহী হও – পূর্ণেন্দু পাত্রী
- অসময় – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
- কোথায় আলো – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- মতিহার সবুজ – রিআ মাহমুদ
- এ দ্যুলোক মধুময় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর